সারমর্ম: দুই মেয়ের পরষ্পর বিপরীতধর্মী আবদার শুনে এক চাষীর যে অবস্থা হল। মোট-১ পৃষ্ঠা
এক চাষীর ছিল দুই মেয়ে। তাদের একজনের বিয়ে হয়েছিল
এক ফুলমালির সঙ্গে অপর জনের এক কুমোরের বাড়িতে। বিয়ের অনেক দিন পরে একবার চাষী মেয়েদের
বাড়ি চলল তাদের খোঁজখবর নিতে।
ফুলমালির বাড়িতে এলে মেয়ে তাকে খুব আদর যত্ন করে ঘরে
নিয়ে বসাল। চাষী মেয়েকে জিজ্ঞেস করল, হ্যাঁ মা, তোরা আছিস কেমন? খবর সব ভাল তো? মেয়ে
বলল, হ্যাঁ বাবা, আমরা বেশ ভালই আছি। অসুবিধা যেটুকু বলতে, তোমার জামাইয়ের এখন খুব
চিন্তায় দিন কাটছে।
চাষী বলল, কেন কেন! জামাইয়ের আবার কী হল?
মেয়ে বলল, সেই বাগান আবার কী, এখন একটু পানির দরকার।
দু-চারদিন জোরে বৃষ্টি হয়ে গেলে আমাদের বাগানের গাছপালাগুলোর বড় উপকার হত। শুনে চাষী
নিশ্চিত হল। মেয়েকে বলল, দেখ স্রষ্টা কী করেন।
রাতটা মেয়ের বাড়িতে কাটিয়ে পরদিন চাষী এল তার কুমোর
জামাইয়ের বাড়ি।
মেয়ে বাবাকে খুবই আদর যত্ন করে খাওয়াল দাওয়াল।
এক সময় চাষী মেয়েকে জিজ্ঞেস করল, হ্যাঁ মা, তোরা আছিস
কেমন? খবর সব ভাল তো?
মেয়ে বলল, তোমার আশীর্বাদে আমরা খুব ভাল আছি বাবা।
তোমার জামাইও মানুষ খুব ভাল, আমার কোন কষ্ট রাখেনি। এখন আমাদের কেবল একটাই চিন্তা মাটির
কাঁচা বাসনগুলো নিয়ে। দিন কতক সূর্যের তাপ আর শুকনো আবহাওয়া দরকার। তাহলে জিনিসগুলো
তাড়াতাড়ি শুকিয়ে নিতে পারব।
মেয়ের কথা শুনে চাষীর মুখ গম্ভীর হয়ে গেল।
বাবাকে চুপচাপ থাকতে দেখে মেয়ে বলল, কী হল বাবা, তুমি
হঠাৎ অমন মুখ ভার করলে কেন?
শরীর ভাল আছে তো?
চাষী নিচিন্তভাবে বলল, মা তুই চাস রোদ্দুর আর তোর
বোন চাইছে বৃষ্টি। কার হয়ে যে আমি স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা জানাই ভেবে পাচ্ছি না।
নীতিকথা: একই সময়ে সম্পূর্ণ বিপরীত দুটি কাজ করতে গেলে কোন কাজই সফল হয় না।
***** সমাপ্ত *****