খাবার খাওয়ার সময় কখনো কখনো শিশুদের
গলায় খাবার আটকে মারা যাবার ঘটনাও ঘটে। তো চলুন দেখি খুঁজে বের করি ঠিক কি কারনে এমনটা
ঘটে, আর এমনটা ঘটলে সাথে সাথে ঠিক কি করতে হবে যাতে শিশুটাকে বাঁচানো যায়।
আমাদের গলার ভিতরে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ রয়েছে যার নাম এপিগ্লটিস বা উপ-জিহবা। আমাদের গলায় শ্বাসনালী এবং খাদ্যনালী পাশাপাশি থাকে। তো এপিগ্লটিসের কাজ হচ্ছে গলা দিয়ে যখন খাবার নামে তখন এপিগ্লটিস শ্বাসনালীর মুখটি বন্ধ করে দেয়। ফলে খাদ্য শ্বাসনালীর মাধ্যমে ফুসফুসে না গিয়ে খাদ্যনালীর মাধ্যমে পেটে চলে যায়। একারনে যখন আমরা খাবারের ঢোক গিলি তখন আমরা নিশ্বাস নিতে পারি না কারন ঐ সময় এপিগ্লটিস শ্বাসনালীর মুখটি বন্ধ করে রাখে।
আমরা যখন শ্বাস প্রশ্বাস নেই তখন
বাহির থেকে বাতাস শ্বাসনালীর মাধ্যমে আমাদের ফুসফুসে ঢুকে। ফুসফুসের একেবারে ভিতরের
দিকে একটা জায়গা আছে যে জায়গার নাম হচ্ছে অ্যালভিওলাই। অ্যালভিওলাই হচ্ছে গোলগোল কতগুলো
বলের মত এবং এগুলোর চতুর্পাশে রক্তনালী আকঁড়ে ধরে অবস্থান করে।
অ্যালভিওলাইয়ের কাজ:
অ্যালভিওলাইতে অক্সিজেন ও কার্বন
ডাই অক্সাইড এর আদান প্রদান ঘটে। অর্থাৎ আমরা যখন বাহিরে থেকে শ্বাস নেই তখন বাতাসে
থাকা অক্সিজেন আমাদের অ্যালভিওলাইয়ে এসে জমা হয়। তারপর এই জমা হওয়া অক্সিজেন অ্যালভিওলাইগুলোকে
আঁকড়ে ধরে থাকা রক্তনালীতে চলে যায়। এই অক্সিজেন নেয়ার পূর্বে রক্তনালী আবার তার মধ্যে
থাকা কার্বন ডাই অক্সাইডকে অ্যালভিওলাইয়ের মধ্যে দিয়ে দেয়।
আর আমরা যখন নিশ্বাস ছাড়ি তখন এই কার্বন ডাই অক্সাইড আমাদের ফুসফুস থেকে বাহিরে বের হয়ে যায়। আর ওদিকে রক্তনালী বিশুদ্ধ অক্সিজেন নিয়ে তা সারা দেহে ছড়িয়ে দেয়।
পৃষ্ঠা ১
এবার আসি শিশুদের শ্বাসনালীতে যদি খাবার আটকেই যায় তাহলে কি করতে হবে! শিশুটিকে প্রথমে মুখটা মাটির দিকে মুখ করে এক হাতের তালুতে মাথাটা একটু নিচু করে ধরতে হবে।
এরপর শিশুটির ঘাড়ে আরেক হাতের তালু দিয়ে উপর থেকে ৫/৬ বার আঘাত করতে হবে।
এভাবে ৫ বার ব্যাক ব্লোজ দেয়ার পরও যদি শ্বাসনালীতে আটকে যাওয়া জিনিসটা বাহিরে বের হয়ে না আসে তাহলে আরেকটা কাজ করা যায়। শিশুটিকে এবার হাতের তালুতে চিৎ করে নিতে হবে। এরপর আরেক হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে শিশুর বুকের ঠিক মাঝখানে প্রেসার দিতে হবে।
***** সমাপ্ত *****