দ্রুত ধনী হতে চাইলে মহানবী (সাঃ) এর বলা ৫টি উপদেশের যে কোন একটিকে অনুসরণ করুন || ইসলামী জীবনব্যবস্থা ১

 

সারমর্ম: জীবনে ধন-সম্পত্তি অর্জনের জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বলা ৫টি উপদেশ। মোট-৫ পৃষ্ঠা


একদিন ওসমান (রাঃ) মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন, হে প্রিয় নবী আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন আমার সম্পদের পরিমান কমে যায়। আমার সম্পদ এত দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে যেটা নিয়ে আমি চিন্তায় আছি। আমি কোনকিছুতেই আমার সম্পদ বৃদ্ধি ঠেকাতে পাচ্ছি না। তখন নবী কারীম (সাঃ) বললেন আজকের পর থেকে তুমি গাধা অথবা উটের পিঠে বসে খাবার খাও। তো নবীর বলা উপদেশ অনুসারে হযরত ওসমান রাঃ সেভাবেই খাবার খেলেন।

কিছুদিন পর আবার তিনি নবীর কাছে আসলেন এসে নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে বললেন হে নবী আপনি আমাকে কি শিখিয়ে দিলেন আমার ধন সম্পদ তো আগের থেকে আরো দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তখন নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন তুমি যখন উটের পিঠে বসে খাবার খাও তখন খাবার নিচে পড়ে গেলে তুমি কি কর। হযরত ওসমান (রাঃ) বললেন যখন আমার হাত থেকে কোন খাবার পরে যায় তখন আমি উটের পিঠ থেকে সেই খাবার পরিষ্কার করে আবার খেয়ে নেই। আর আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি কারন যে মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে ভালবেসে রিজিক দিয়েছেন তা আমি কিভাবে নষ্ট হতে দেই।

তখন নবী কারীম (সাঃ) বললেন তুমি নিজেই যখন আল্লাহর দেয়া রিজিকে এতটা শুকরিয়া আদায় কর তখন তোমার এই সম্পদ বৃদ্ধি ঠেকানো অসম্ভব। সুতারাং যে ব্যক্তি আল্লাহর দেয়া রিজিককে ভালবাসবে এবং আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করবে তার সম্পদ দিন দিন বৃদ্ধি পারে তার নিজের অজান্তেই এবং এটাই সত্য।

এই ঘটনার মতই প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনের এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যে ঘটনাগুলো থেকে আমরা ধনী হবার বিষয়ে নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছ থেকে বিভিন্ন শিক্ষা পেয়ে থাকি।

যাইহোক, আজকের এই লেখাতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবন থেকে ধনী হওয়া নিয়ে ৫টি উপদেশ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

নবীর জীবন থেকে নেয়া প্রথম উপদেশটি হচ্ছে হিজরত বা পরিত্যাগ করা।



আপনারা হয়তোবা অনেকেই জানেন যে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ৪০ বছর বয়সে নবুয়্যাত প্রাপ্ত হন। নবুয়্যাত প্রাপ্ত হবার পর আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে তিনি মক্কায় ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে থাকেন। ইসলাম ধর্ম প্রচারের পূর্বে মক্কাবাসীর সবাই পৌত্তলিক (মূর্তি পূঁজায়) ধর্মে বিশ্বাসী ছিল এবং তারা সবাই হারাম কর্মে লিপ্ত ছিল। যখন আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে থাকেন তখন শুরুতেই নবী মুহাম্মদকে নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এক পর্যায়ে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয় যে মক্কায় থাকাটা নবীর প্রাণের সংশয় হয়ে দাঁড়ায়। 


পৃষ্ঠা ১



তখন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে মদীনায় হিজরত করেন। মদীনাবাসীর সাবাই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে সাদরে গ্রহণ করেন এবং তাকে তাদের নেতা হিসেবে মেনে নেন। সেখানে যাওয়ার পর ইসলাম ধর্মের ব্যপক প্রসার লাভ করতে থাকে এবং ধীরে ধীরে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

পরবর্তীতে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মদীনাবাসী এবং নবমুসলিমদের নিয়ে মক্কা বিজয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কা বিজয় করেন। যে মক্কা থেকে কাফেরদের অত্যাচারে মহানবী আট বছর আগে মদীনায় হিজরত করেন সেই মক্কাতেই তিনি আট বছর পর মক্কার সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ফিরে আসেন।

তো নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর হিজরত আমাদের এটাই শিক্ষা দেয় যে যদি কোন একটা স্থানে আপনার ভাগ্য পরিবর্তন না হয় তাহলে আপনি সেই স্থান পরিবর্তন করে অন্য স্থানে যেতে পারেন। এতে আপনার ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভবনা অনেকগুণ বাড়বে। বর্তমান সময়ে এটার তেমন প্রচলন নেই কিন্তু অতীতে এটার প্রচলন ছিল যে ব্যবস্থা বাণিজ্য করার জন্য বাসা ছেড়ে বেশকিছু দিনের জন্য একস্থান থেকে অন্যস্থানে ভ্রমণ করতে হত। এমনকি অনেক দূরের দেশগুলোতে গিয়েও মানুষ ছয় মাস এক বছর থেকে ব্যবসা করে আসতো। এতে ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় অনেক লাভবান হতেন।

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বয়স যখন ১২ বছর তখন তিনি তার চাচার সাথে সিরিয়ায় যান ব্যবসার উদ্দেশ্যে। সুতারাং যারা অনেক চেষ্টা ও পরিশ্রম করার পরও নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারছেন না তাদের সর্বপ্রথম কাজ হবে আপনার এলাকা বা স্থান পরিত্যাগ করুন সাময়িক সময়ের জন্য। স্থান পরিবর্তনের কারনে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় সেটার একটা বাস্তব উদাহরণ দেই।

কিছুদিন আগে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে ভোটার কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে আরো দুইবার আমাদের ইউনিয়নে ভোটার কার্যক্রম হয়েছিল কিন্তু আমার পরীক্ষা চলার কারনে আমি সেখানে ভোটার হতে পারিনি। তো এবার আমি ভোটার হওয়ার জন্য গ্রামে যাই। আমাদের গ্রাম থেকে ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হলে দুইটা গ্রাম এবং দুইটা নদী পার হয়ে যেতে হয়। আমার সাথে আমার এক চাচাও যাচ্ছিলেন। আমাদের এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থা তেমন ভাল নয়। আমি আর আমার চাচা পায়ে হেটেই যাচ্ছিলাম। রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে একটা বিষয় লক্ষ করলাম। যে গ্রামের উপর দিয়ে আমরা যাচ্ছি সেই গ্রামে মোটামুটি সবগুলো বাড়ি হাফ বিল্ডিং করা।



অনেকগুলো বাড়ি আবার দোতলা। ১০টার মধ্যে ৯টা বাড়িই হাফ বিল্ডিং। কিন্তু কিছু বছর আগেও এই এলাকার মানুষ অত্যন্ত গরিব ছিল, একটা ঘরে সবাই গাদাগাদি হয়ে জীবনযাপন করতো। তখন আমি এই বিষয়টা নিয়ে আমার চাচাকে প্রশ্ন করলাম যে বর্তমানে কিভাবে এই গ্রামের অবস্থা এতটা পরিবর্তন হয়েছে। এই গ্রামের সবাই কি কোন গুপ্তধন পেল নাকি!


পৃষ্ঠা ২



তখন চাচা আমাকে বললো আরে না বেটা। এই গ্রামকে এখন শহুরে গ্রাম বলা হয়। আমি অবাক হয়ে বললাম কিভাবে? তখন চাচা বললেন এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ ঢাকায়, কেউ নারায়ণগঞ্জ আবার কেউ চট্টগ্রামে থাকে। এই গ্রামে যাদের পরিবারে ৪ থেকে ৫ জন সদস্য ছিল তাদের মধ্যে ৩ জনই শহরে থাকে। তারা শহরে কাজ করে, অনেকে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে কাজ করে আবার অনেকে বাসাবাড়িতে আবার কেউ দোকানে কাজ করে। যে যেখানে পাচ্ছে সেখানে কাজ করছে। এক-এক জন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করছে মাসে। তো দেখা যায় এক পরিবারের সবাই মিলে মাসে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা আয় করছে। আর এভাবেই ৫ থেকে ৭ বছরে এই গ্রামের চেহারা এতটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। প্রথমদিকে একজন দুজন পরবর্তীতে এদের দেখাদেখি গ্রামের মোটামুটি অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা এখন শহরে কাজ করছে।

তাই আপনি যদি আপনার নিজ এলাকায় কিছু না করতে পারেন তাহলে সাময়িক সময়ের জন্য আপনার এলাকা পরিবর্তন করে অন্য কোন এলাকায় অবস্থান করুন এবং কাজ করার চেষ্টা করুন। এতে নিশ্চয়ই আপনার ভাগ্য পরিবর্তন হবে, ইনশাআল্লাহ।

মহানবীর দেয়া দ্বিতীয় উপদেশটি বলার আগে আপনাদের মহানবীর জীবনের একটা ছোট গল্প বলি। একদা এক যুবক মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে আসলো নিজের দারিদ্রতার অভিযোগ নিয়ে। বালকটি বললো ইয়া রাসুলআল্লাহ আমি অনেক গরিব। জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কোনকিছুই আমার কাছে নেই। আমি আমার পরিবারের খরচ বহন করতে পারছি না। ইয়া রাসুলআল্লাহ আপনি আমার উপর দয়া করুন।

তখন মহানবী (সাঃ) যুবকটিকে প্রশ্ন করলেন তোমার ঘরে কি আছে। সেই যুবক জবাব দিল আমার কাছে একটি কম্বল আর একটি পেয়ালা ছাড়া আর কিছুই নেই। এটা শুনে হুজুর সাঃ বললেন যাও, যা আছে তাই নিয়ে এসো। এরপর যুবকটি তার বাড়িতে গিয়ে কম্বল ও পেয়ালাটি নিয়ে আসলো। নবী সেগুলো বিক্রি করে একটা কুঠার কিনে আনলেন এবং নবী নিজের হাতে কুঠারটির হাতল লাগিয়ে দিলেন। আর বললেন যাও, এটা নিয়ে বনে যাও, কাঠ কাটো আর লাকরি সংগ্রহ কর। এরপর যুবকটি জঙ্গল থেকে লাকরি কেটে এনে বাজারে বিক্রি করতে লাগলো।



১৫ দিন পর অত্যন্ত আনন্দ চিত্তে নবীর কাছে এসে বললো ইয়া রাসুলআল্লাহ আমি মাত্র ১৫ দিনে আল্লাহ তায়ালার রহমতে ১০ দিরহাম আয় করেছি। এবার নবী কারীম (সাঃ) বললেন তুমি এই ১০ দিরহামকে তিনভাগে ভাগ কর। একভাগ নিজের জন্য খরচ কর, একভাগ আত্মীয়স্বজনের জন্য খরচ কর এবং বাকী একভাগ গরীবদের জন্য। তাহলে তোমার সম্পদে আল্লাহর পক্ষ থেকে আরো বরকত আসবে। এরপর থেকে যুবকটি যতই আয় করতো সেই আয়কে তিনটি ভাগে ভাগ করে নবীজির কথামত ব্যয় করতেন। এভাবে আমল করতে করতে মদীনার সবচেয়ে গরীব যুবকটি হযরত উমর (রাঃ) এর জামানায় সবচেয়ে ধনী লোকেদের একজনে পরিনত হন।


পৃষ্ঠা ৩



তো নবীর এই উপদেশ থেকে আমরা শিখতে পারলাম যে ধনী হতে হলে আপনাকে আগে বেশি বেশি দান করতে হবে। আপনি যত বেশি দানশীল হবেন আপনার রিজিকে তত বেশি বরকত আসবে। তাই নবীর দেয়া দ্বিতীয় উপদেশটি হল যতটুকু সম্ভব সামর্থ অনুযায়ী দান করুন।

তৃতীয় উপদেশটি শুধুমাত্র মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ই বলেননি আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালাও এই বিষয়ে কুরআনে বলেছেন। আল্লাহ তায়ালা সুরা নূরের ৩২ নম্বর আয়াতে বলেন তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত (তারা পুরুষ হোক বা নারী) তাদের বিবাহ সম্পাদন কর এবং তোমাদের গোলাম ও বাঁদীদের মধ্যে যারা বিবাহের উপযুক্ত তাদেরও বিবাহ সম্পাদন করে দাও। তারা অভাবগ্রস্থ হলে আল্লাহ তায়ালা নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাব হতে মুক্ত করে দিবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ। 



এই আয়াতটির ব্যখ্যায় হযরত আবু বকর (রাঃ) বলেন তোমরা বিয়ে করে আল্লাহর নির্দেশ পালন কর তাহলে তিনিও তোমাদেরকে দেয়া অঙ্গীকার পালন করবেন।

এছাড়াও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনেক হাদীস থেকে জানা যায় যে বিয়ে করলে রিজিক বৃদ্ধি পায়। এক হাদীসে এসেছে যে আল্লাহ তায়ালা তিন শ্রেণির লোকেদের নিজ হাতে সরাসরি দান করেন। তার মধ্যে একশ্রেনির হচ্ছেন যারা বিবাহ করে লজ্জাস্থানের হেফাজতের জন্য। কিন্তু আবার অন্য হাদীসে এসেছে যে শুধু বিয়ে করলেই হবে না বিয়ের পরবর্তী সময়ে আল্লাহপাকের নির্দেশ অনুসারে জীবনযাপন করতে হবে। তাহলেই আল্লাহ তায়ালা তার দেয়া কথা অনুসারে আপনাকে অভাবমুক্ত করবেন।

ধনী হওয়ার জন্য নবীর দেয়া চতুর্থ উপদেশটি হল ক্ষমার মাধ্যমে রবের কাছ থেকে ধন সম্পদ চেয়ে নেয়া।



সবাই চায় তার রিজিক বেড়ে যাক এবং সহজেই ধনী হোক, জীবনে প্রাচুর্যতা আসুক। কিন্তু কিছু মানুষ অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তায় এমন অস্থির হয়ে আছে যে তারা ভুলেই গেছে মানব ও জ্বীন জাতি সহ সব সৃষ্টির জীবিকার দ্বায়িত্ব মহান আল্লাহ তায়ালা নিজেই নিয়েছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন “আর আমি তো বলেছি তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন এবং তিনি তোমাদেরকে ধন-সম্পদ এবং সন্তান-সন্ততির মাধ্যমে সমৃদ্ধ করে দিবেন” - (সুরা নুহ, আয়াত ১০-১২)।

নবীজি (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি অধিক পরিমানে আসতাগফিরুল্লাহপড়বে যার অর্থ ‘আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি’ আল্লাহ তাকে সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করবেন। সব সংকট থেকে মুক্তি দিবেন এবং তাকে এমনভাবে অর্থ দান করবেন যা কোন মানুষ ধারণাও করতে পারবে না।

হযরত ইবনে উমর (রাঃ) এর এক বর্ণনায় এসেছে একসময় এক জনৈক ব্যক্তি হুজুরপাক (সাঃ) এর খেদমতে এসে আরজ করলেন, হে রাসুলআল্লাহ দুনিয়া আমাকে পরিত্যাগ করেছে। আমি অভাবগ্রস্থ ও অক্ষম হয়ে পড়েছি। এর থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় আছে কি?


পৃষ্ঠা ৪



তদুত্তরে হুজুরপাক (সাঃ) বলেন, তুমি কোথায় আছো- ইহলোকে না পরলোকে। সালাতে মালায়েকা যা ফেরেসতাগণের দোয়া এবং তাসবীহে খালায়েক যার বদৌলতে ফেরেসতাগণকে রিজিক প্রদান করা হয় তা তোমার কাছ থেকে কোথায় গেল? যে দোয়া ও প্রার্থনার বরকতে ফেরেশতাকূল এবং মানবজাতি স্ব স্ব জীবিকা প্রাপ্ত হয় তা কি তুমি জানো! তখন সে ব্যক্তি আরজ করলো সেই দু’আ কি ইয়া রাসুলআল্লাহ। তখন হুজুরপাক (সাঃ) বললেন সুবহানাল্লহী ওয়া বিহামদীহি সুবহানাল্লহীল আজীমী ওয়া বিহামদীহি আসতাগফিরুল্লাহ।এর অর্থ হচ্ছে “মহান আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং তার প্রশংসার বর্ণনার সাথে আল্লাহ তায়ালার নিকট হতে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।” এ দুআ প্রতিদিন ফজরের নামাজের আগে অথবা পরে ১০০ বার করে পড়তে হবে, এক জায়গাতে বসে দোয়াটি পড়তে হবে। দোয়া পড়ার সময় দুনিয়াবি কোন চিন্তা করা যাবে না।

অতপর নবী কারীম (সাঃ) এর কাছ থেকে এ পরামর্শ নিয়ে লোকটি চলে গেল এবং দীর্ঘদিন পর্যন্ত ফিরে এলো না। অনেকদিন পর একদিন সেই লোকটি নবীজি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে এসে আরজ করলো ইয়া রাসুল আল্লাহ দুনিয়া আমার কাছে এত বেশি পরিমানে এসেছে যে তাকে কোথায় রাখবো তা আমি বুঝতে পারছি না। এখন আর আমার কোন অভাব নেই।

তাই আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে যে আমাদের রিজিকের ব্যবস্থা মহান আল্লাহই করবেন। রিজিক অন্বেষণের সাথে সাথে মহান আল্লাহর কাছে সর্বাবস্থায় ক্ষমা চাইতে হবে এবং প্রার্থনা করে যেতে হবে যে তিনি যেন আমাদের সবাইকে উত্তম রিজিক দান করেন।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর পঞ্চম উপদেশটি হল সর্বাবস্থায় আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা, যা এই লেখাটির শুরুতেই হযরত উসমান (রাঃ) এর জীবনের গল্পটির মাধ্যমে আপনাদের বুঝিয়েছি।

তো যাইহোক এই ছিল আমার জানা ধনী হওয়ার জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বলা সবচেয়ে মূল্যবান পাঁচটি উপদেশ। এগুলো আপনি নিয়মিত আমল করলে আপনার অভাব অজান্তেই দূর হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।

            

***** সমাপ্ত ***** 

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post